বিশ্ব
ইরানে আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬০
ইরানের রাজধানী তেহরানে একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে ২০টি শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। শনিবার (১৪ জুন) এ হামলা চালানো হয়।
এছাড়াও আরও ইরানি সামরিক বাহিনীর দুজন জেনারেল নিহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম। নিহতরা হলেন—জেনারেল গোলামরেজা মেহরাবি ও জেনারেল মেহদি রাব্বানি।
তবে, তারা কবে নিহত হন, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ: দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ
এছাড়া পৃথক আরেকটি হামলায় ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হামদান প্রদেশে দুজন নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়েছেন। প্রদেশের গভর্নরের নিরাপত্তা সহকারী জানান, আহতদের মধ্যে উদ্ধারকর্মীরাও রয়েছেন।
এর আগে, ইরানে জাতিসংঘে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত শুক্রবার বলেন, ইসরায়েলের চালানো প্রথম ধাপের হামলায় ৭৮ জন নিহত এবং ৩২০ জন আহত হয়েছেন।
এই হামলার পর দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় প্রতিরক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছিল তেহরান। অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানি জনগণকে নিজ দেশের সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
ইসরায়েলে হামলা অব্যাহত থাকবে: ইরানি সেনাকর্মকর্তা
ইসরায়েলে ইরানের হামলা অব্যাহত থাকবে বলে দাবি করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তার বরাতে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ফারস জানিয়েছে, ‘গতরাতের সীমিত পদক্ষেপের মধ্যেই এই সংঘাত শেষ হবে না। আগ্রাসনকারীদের জন্য এই হামলা হবে যন্ত্রণাদায়ক ও অনুশোচনামূলক।’-খবর আল-জাজিরা ও বিবিসির।
ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইরান আগামীতে এই অঞ্চলের মার্কিন ঘাঁটিগুলোতেও পাল্টা হামলা চালাবে।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইসরায়েল তাদের দীর্ঘদিনের প্রতিপক্ষ ইরানের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় বিমান হামলা চালায়। একের পর এক বিমান হামলায় প্রথমে ইরানের সামরিক নেতৃত্ব ও গোয়েন্দা কাঠামোতে আঘাত করে।
এরপর ধারাবাহিক হামলায় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র এবং শেষে দেশটির বৃহত্তম ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতানজে হামলা চালানো হয়। হামলায় ইরানের শীর্ষ তিন সামরিক কর্মকর্তা ও ৬জন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ অন্তত ৭৮ জন নিহত ও ৩২৯ জন আহত হয়েছেন।
এরপর পাল্টা হামরা চালায় ইরান। এতে, এখন পর্যন্ত ৩ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ: দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ
এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, তারা এখনো ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনাগুলোকে নিশানা করে হামলা চালাচ্ছে। এমনকি তারা ইরানের ভূমি থেকে ভূমিতে ও ভূমি থেকে আকাশে হামলার ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনাকেও লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ: দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ
মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের চিরশত্রু ইরানের ওপর নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার (১৩ জুন) রাজধানী তেহরানসহ দেশটির শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে এই হামলা হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি করা এ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন রাইজিং লায়ন বা জেগে উঠা সিংহ। হামলার মূল কারণই ছিল পশ্চিমাদের ভাষায় ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচির সক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া।
হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়া মধ্যপ্রাচ্যকে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। এদিকে, ইরানও ইসরায়েলের হামলার জবাবে ‘ট্রু প্রমিস ৩’ নামের অভিযান শুরু করেছে।
শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতানজ, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা, শীর্ষ কমান্ডার ও পরমাণু বিজ্ঞানীরা হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। এই হামলায় অন্তত ২০০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয় বলে জানায় ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: ইরানে ইসরায়েলের হামলা আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, জড়াতে পারে যুক্তরাষ্ট্রও
এদিন ভোররাত থেকে একের পর এক বিমান হামলায় প্রথমে ইরানের সামরিক নেতৃত্ব ও গোয়েন্দা কাঠামোতে আঘাত করে। এরপর ধারাবাহিক হামলায় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র এবং শেষে দেশটির বৃহত্তম ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতানজে হামলা চালানো হয়।
নাতানজের আংশিক ভূ-উপরিভাগে হওয়ায় সরাসরি আঘাত করতে সক্ষম হয়েছে ইসরায়েল।
৬ ঘণ্টা আগে
ইসরায়েলে ইরানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ইসরায়েলের দ্বিতীয় দফা আক্রমণের জবাবে এবার দেশটির সামরিক ও বিমানঘাঁটিগুলোতে একযোগে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা থামা চলমান থাকায় তা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
শুক্রবার (১৪ জুন) ভোর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশদুটির পাল্টাপাল্টি হামলায় হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। তবে হতাহতের বেশিরভাগই ইরানের।
উভয় পক্ষের কর্মকর্তারাই তাদের অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) শুক্রবার রাতে এ হামলা চালানোর কথা জানায়। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ইসরায়েলের হামলার জবাবে ‘ট্রু প্রমিস ৩’ নামের এই অভিযান শুরু হয়েছে।
ইসারায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, ইরান ১০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যেগুলোর বেশিরভাগ তারা প্রতিহত করেছে।
অপরদিকে, ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে। ভূমিতে স্থাপিত ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থার মাধ্যমেই সেগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে এখনও যুদ্ধবিমান কিংবা যুদ্ধ জাহাজের সহায়তা নেওয়া হয়নি।
এদিকে, তেল আবিবের পূর্ব এলাকা রামাত জানে ইরানের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের আশপাশ থেকে আহতদের সরিয়ে নেওয়ার ছবি ও ভিডিও দেখা গেছে।
তেল আবিব মহানগর এলাকায় রকেট হামলায় পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় অ্যাম্বুলেন্স সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড অ্যাডম।
আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মাগেন ডেভিড অ্যাডমের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত তেল আবিব এলাকায় হামলার খবর পাওয়া সাতটি স্থানে আমাদের উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে।’
৯ ঘণ্টা আগে
ইরানের যেসব লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলের হামলা, বর্তমান অবস্থা ও নিহত যারা
পাঁচ দফায় ইরানের শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে চালিয়েছে ইসরায়েল। ইরানের নাতাঞ্জের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীরা হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। এই হামলায় অন্তত ২০০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয় বলে জানায় টাইমস অব ইসরায়েল।
দেশটির রাজধানী তেহরানে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) সদর দপ্তরেও হামলা হয়েছে। এছাড়া, দেশটির তাবরিজ শহরেও হামলার খবর পাওয়া গেছে।
পড়ুন: ইরানে ইসরায়েলের হামলা আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, জড়াতে পারে যুক্তরাষ্ট্রও
থেমে নেই হামলা
ইসরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এ ইরানের নাতাঞ্জে ও তাবরিজের ঘাঁটি নিশানা করে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে জানা যায়, ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তাবরিজে একটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বিবিসিকে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) সংশ্লিষ্ট একটি বার্তা সংস্থা।
এছাড়া, ইসরায়েল নাতাঞ্জে দ্বিতীয় দফা হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এটি ইরানের বৃহত্তম ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, যেখানে হাজার হাজার সেন্ট্রিফিউজ রয়েছে। এটি দেশটির উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম মজুদের অন্যতম প্রধান উৎস।
পড়ুন: ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কেন এত বিতর্কিত?
ইসরায়েলের এই অভিযানে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে এবং অঞ্চলজুড়ে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি নিহত
ইরানের অভিজাত বাহিনী আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। ইরানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম তথ্যটি নিশ্চিত করেছে। এই হামলায় সালামি, জরুরি কমান্ড ইউনিটের প্রধান জেনারেল গোলাম আলি রশিদসহ আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা নিহত হয়েছেন বলেও খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত হোসেইন সালামিকে ইরানের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সালামির নেতৃত্বেই ২০২৪ সালে ইরান প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক হামলা চালায়। ওই হামলায় ৩০০টিরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান নিহত
অপারেশন রাইজিং লায়নে পৃথক একটি হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি। বাঘেরি ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তা।
পড়ুন: নিহত আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি কে ছিলেন?
৬ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত
ইসরায়েলের হামলায় ইরানের ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের পরমাণু জ্বালানি সংস্থার (এইওআই) সাবেক প্রধান ফিরেদুন আব্বাসি ও তেহরানের ইসলামি আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ মেহদি তেরাঞ্চি এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। দেশটির পরমাণু স্থাপনাগুলোর দেখভাল করে থাকে পরমাণু শক্তি সংস্থা (এইওআই)।
পড়ুন: ট্রাম্পের আশঙ্কা ও সতর্কতার পরই ইরানে হামলা ইসরায়েলের
ইরানের নুর নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, তেহরানে রাতভর ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৭৮ জন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন ৩২৯ জন। দেশটির কর্মকর্তার বরাতে তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদ সংস্থাটি।
শুক্রবার ইসরায়েলি হামলায় ইরানের একাধিক সেনা কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
২১ ঘণ্টা আগে
ইরানে ইসরায়েলের হামলা আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, জড়াতে পারে যুক্তরাষ্ট্রও
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় অঞ্চলজুড়ে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়া মধ্যপ্রাচ্যকে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়লে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।
এর আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ইসরায়েল খুব শিগগিরই ইরানে হামলার পরিকল্পনা করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তাদের দূতাবাস ও সামরিক ঘাঁটি থেকে বেশকিছু কর্মী ও কূটনীতিককে সরিয়ে নিয়েছে। সম্ভাব্য ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কায় তারা দূতাবাসগুলোতেও সতর্কতা জারি করেছিল। মূলত তখন থেকেই হামলার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল।
শুক্রবার (১৩ জুন) ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, তারা ইরানের পাল্টা হামলা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরই মধ্যে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কেন এত বিতর্কিত?
ইসরায়েলের এই হামলার পর ইসরায়েলের সাধারণ জনগণসহ সারা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই হামলা অঞ্চলটিকে একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ঠেলে দিচ্ছে।
ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব
ইরান ‘অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্স’ নামে পরিচিত একটি আঞ্চলিক জোটের নেতৃত্ব রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা এবং ইরাক-সিরিয়ায় আরও বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ মিত্র গোষ্ঠী। এদের সক্রিয়তা এই সংঘাতকে আরও বিস্তৃত করে তুলতে পারে।
বিশ্লেষকরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ইসরায়েল যদি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর সরাসরি হামলা চালায়, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তেহরানের চলমান আলোচনা চূড়ান্তভাবে ভেস্তে দিতে পারে।
গত বছর ইসরায়েল ও ইরানের দীর্ঘ দিনের ছায়াযুদ্ধ সরাসরি সংঘাতে রূপ নেয়। এ সময় উভয় পক্ষই সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
সেসময় ইরানের জ্বালানি বা পারমাণবিক অবকাঠামোয় যেন ইসায়েল হামলা না চালায়—সে ব্যাপারে সতর্ক করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, ইরানও তখন নিজ অবস্থান বোঝাতে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখায়। তবে, কৌশলগত প্রতিক্রিয়া হিসেবে ক্ষয়ক্ষতি সীমিত রাখে দেশটি।
তবে এবারের হামলাটি আগের চেয়ে অনেক বেশি ভয়াবহ হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধের পর এবারই সবচেয়ে বড় হামলার সম্মুখীন হলো ইরান।
আজ (শুক্রবার) ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ একাধিক স্থানে হামলা চালায় ইসরায়েল। ইসরায়েলের দাবি, হামলায় নাতাঞ্জে অবস্থিত ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীরা তাদের লক্ষ্যবস্তু ছিল।
এই হামলায় অন্তত ২০০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়, যেগুলো দেশটির ভেতরে প্রায় ১০০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে বলে জানায় টাইমস অব ইসরায়েল।
এই হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি নিহত হন দেশটির ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি এবং ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি। এছাড়াও, ৬ জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন।
আরও পড়ুন: ইরান পরমাণু চুক্তি না করলে আরও ভয়াবহ হামলার হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক বেথ স্যানার বলেন, সালামিকে হত্যা করা মানে যেন যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যানকে মেরে ফেলার সমান—এমন হলে আমেরিকানরা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাতো, ভাবুন একবার।’
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ইরান অস্তিত্বের হুমকিতে। এ কারণেই ইসরায়েল অনেক বড় ধরনের প্রতিশোধমূলক হামলার মুখে রয়েছে, যা ইসরায়েল গতবার ইরানের হামলার সময় দেখেছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
২২ ঘণ্টা আগে
ইরান পরমাণু চুক্তি না করলে আরও ভয়াবহ হামলার হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছানোর তাগিদ দিয়েছেন। আর তা না হলে আরও ভয়ংকর হামলার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। চুক্তির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তেহরানকে ‘একবার নয়, বারবার সুযোগ’ দিয়েছি।’
শুক্রবার (১৩ জুন) নিজের মালিকানাধীন সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেন, ‘আমি ইরানকে কঠোর ভাষায় চুক্তি করতে বলেছিলাম, কিন্তু তারা সেটি করেনি।’
ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে বহু মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। এই হত্যাযজ্ঞ থামানোর এখনও সময় আছে, কারণ, সামনে আরও পরিকল্পিত ভয়াবহ হামলা করা হবে।’
‘ইরানকে এখনই চুক্তিতে আসতে হবে। নাহয়, ইরানি সাম্রাজ্য বলতে কিছুই থাকবে না,’ হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের আশঙ্কা ও সতর্কতার পরই ইরানে হামলা ইসরায়েলের
চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আর মৃত্যু নয়, আর ধ্বংস নয়—এখনই করো, খুব দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই।’
এর আগে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ইসরায়েলের হামলার পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি আগেই জানতেন। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী কোনোভাবেই অংশ নেয়নি।
আগামী রবিবার (১৫ জুন) যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ষষ্ঠ দফার আলোচনায় বসার কথা ছিল।
সূত্র: বিভিন্ন নিউজ এজেন্সি
১ দিন আগে
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কেন এত বিতর্কিত?
ইরানের রাজধানী তেহরানসহ একাধিক স্থানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে নিহত হয়েছেন দেশটির শীর্ষ দুই সামরিক কর্মকর্তা ও ৬ পরমাণু বিজ্ঞানী। শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে চালানো এই অপারেশনের নাম দেওয়া হয়েছে রাইজিং লায়ন। নজিরবিহীন এই হামলার মূল কারণই ছিল পশ্চিমাদের ভাষায় ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচি।
দীর্ঘদিন ধরে তেহরান দাবি করে আসছে তারা শান্তিপূর্ণ কাজে পারমাণবিক প্রযুক্তির দক্ষতা অর্জনের উদ্দেশ্যে কাজ করছে। তবে পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। ইরান সেটি বরাবরই অস্বীকার করেছে। অন্যদিকেজাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আএইএ) অনেকদিন ধরেই ইরানকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের দায় দিয়ে আসছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) প্রায় দুই দশকে প্রথমবারের মতো আএইএ আনুষ্ঠানিকভাবে ইরানকে এই শর্ত ভঙ্গের জন্য অভিযুক্ত করে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ও আএইএ-এর মতে, ইরান ২০০৩ সাল পর্যন্ত একটি গোপন ও সমন্বিত পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি চালিয়েছিল। তবে ইরান বরাবরই এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
পরমাণু চুক্তি-২০১৫ অনুযায়ী, ইরানকে ইউরেনিয়াম সর্বোচ্চ ৩.৬৭ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সে সময় দেশটি ৩০০ কেজি পর্যন্ত ইউরেনিয়াম মজুদ রাখতে পারত এবং শুধুমাত্র প্রাথমিক মানের আইআর-১ সেন্ট্রিফিউজ ব্যবহার করতে পারত— যন্ত্রগুলো দ্রুতগতিতে ইউরেনিয়াম গ্যাস ঘুরিয়ে তা সমৃদ্ধ করতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের হামলায় যুক্তরাষ্ট্র জড়িত নয়: ট্রাম্প প্রশাসন
কিন্তু ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেয়। এরপর থেকেই ইরান ধীরে ধীরে চুক্তি লঙ্ঘন করে নিজেদের পারমাণবিক সক্ষমতা বাড়াতে থাকে। তারা ইউরেনিয়াম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করতে শুরু করে। —যা অস্ত্র তৈরির জন্য ৯০ শতাংশ প্রযুক্তিগত পদক্ষেপ থেকে একটু দূরের পর্যায়।
এরপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিত ইরানকে বিভিন্ন নিষেধাধাজ্ঞা দিয়ে আসছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাগুলো ইরানের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা দিলেও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ থেকে পুরোপুরি নিবৃত্ত করতে পারেনি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানের একজন প্রধান পারমাণবিক বিজ্ঞানীসহ শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল। কিন্তু, এতেও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম থেমে যায়নি দেশটির।
ইরান স্পষ্ট করে বলেছে, ইউরেনিয়াম মজুদের ব্যাপারে তারা কোনো আলোচনা করবে না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আএইএ) একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান এমন তিনটি স্থানে গোপনে পারমাণবিক কার্যক্রম চালিয়েছে, যেগুলোর বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তদন্ত চলছে এবং যেখানে ব্যবহৃত উপকরণগুলোর তথ্য আএইএ-কে জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের হামলা
গত মে মাসের শেষ দিকে আএইএ জানায়, ইরানের কাছে বর্তমানে ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের পরিমাণ বেড়ে ৪০৮ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, এটিকে আরও সমৃদ্ধ করলে প্রায় নয়টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব।
১ দিন আগে
ট্রাম্পের আশঙ্কা ও সতর্কতার পরই ইরানে হামলা ইসরায়েলের
গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রাচ্যে ‘বড় সংঘাতের সম্ভাবনা’র বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মন্তব্যের পর রাত না পেরোতেই ইরানে হামলা করল ইসরায়েল।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা অত্যন্ত সম্ভাব্য একটি বিষয়।
তবে এই সংঘাত এড়াতে চান উল্লেখ করে তিনি ইসরায়েলের প্রতি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা না চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনায় তেহরান যদি আপস করে, তাহলে সমঝোতায় পৌঁছানোর অনেকটাই কাছাকাছি রয়েছে বলে নিজের ধারণার কথা জানান তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে চাই। আমরা চুক্তির বেশ কাছাকাছি চলে এসেছি...আমি বরং একটি চুক্তি চাই। এই চুক্তিকেই আমি বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি।’
‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমি মনে করি যে চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে, ততক্ষণ আমি চাই না যে তারা (ইসরায়েল) আগ বাড়িয়ে (ইরানে) ঢুকে পড়ুক। কারণ এর ফলে চুক্তিটি ভেস্তে যেতে পারে। যদিও এতে উপকারও কিছু হতে পারে, তবে পুরো বিষয়টিই নস্যাৎ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও আছে।’
আরও পড়ুন: পাল্টা জবাবে ইসরায়েলে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইরান
সবকিছুর উপরে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথেই হাঁটার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইরানের কাছে কোনোভাবেই পরমাণু অস্ত্র থাকা চলবে না। তাছাড়া আমি চাই যে, তারা (আলোচনায়) সফল হোক। আমরা তাদের সঙ্গে বাণিজ্য করব, প্রয়োজনীয় সবকিছুই করব।’
তিনি আরও জানান, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানে হামলার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। তবে এ ধরনের হামলা ‘বৃহৎ সংঘাতের’ জন্ম দিতে পারে বলেও সতর্ক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি এটিকে “অতি আসন্ন” বলতে চাই না, কিন্তু এটি ঘটার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।’
নিজেকে ‘শান্তির পক্ষের মানুষ’ হিসেবে বর্ণনা করে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি সংঘাত এড়িয়ে যেতে চাই। ইরানকে আরও কঠোরভাবে আলোচনায় আসতে হবে। অর্থাৎ, এখন যে কয়েকটি বিষয়ে তারা একমত নয়, সেগুলোতে রাজি হতে হবে।’
পরে নিজের ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প আবারও ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কথা জানান। তিনি লেখেন, ‘আমার পুরো প্রশাসনকে ইরানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
‘ইরান একটি মহান দেশ হতে পারে, তবে আগে তাদের পরমাণু অস্ত্রের আকাঙ্ক্ষা পুরোপুরি ত্যাগ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের হামলায় যুক্তরাষ্ট্র জড়িত নয়: ট্রাম্প প্রশাসন
এর আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ইসরায়েল খুব শিগগিরই ইরানে হামলার পরিকল্পনা করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তাদের দূতাবাস ও সামরিক ঘাঁটি থেকে বেশকিছু কর্মী ও কূটনীতিককে সরিয়ে নিয়েছে। সম্ভাব্য ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কায় তারা দূতাবাসগুলোতেও সতর্কতা জারি করেছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘ওই অঞ্চলে অনেক মার্কিন নাগরিক রয়েছেন। তারা যেন সরে যান, সে বিষয়ে আমি (দায়িত্বপ্রাপ্তদের) বলে দিয়েছি। কারণ, খুব শিগগিরই কিছু একটা ঘটতে পারে। আমি এমন একজন হতে চাই না, যিনি কোনো ধরনের সতর্কবার্তা না দিয়ে বসে থাকেন, তারপর ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে তাদের ভবনে আঘাত হানে। এটার সম্ভাবনা আছে কিন্তু!’
তবে ট্রাম্পের এসব মন্তব্যের মধ্যেই ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি ইসরায়েলি গণমাধ্যম ওয়াইনেটকে বলেন, হোয়াইট হাউসের সম্মতি ছাড়া ইসরায়েলের ইরানে হামলা চালানোর সম্ভাবনা খুবই কম।
কিন্তু তার এই ধারণা আপাদমস্তক উল্টে দিয়ে শুক্রবার ভোরেই হামলা চালায় ইসরায়েল। পাঁচ দফায় ইরানের শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে চালানো হয়েছে এই হামলা।
১ দিন আগে
ইসরায়েলের হামলায় যুক্তরাষ্ট্র জড়িত নয়: ট্রাম্প প্রশাসন
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কর্মকর্তাকে লক্ষ্য করে দেশটির বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যুক্ত নেই বলে দাবি করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।
শুক্রবার (১৩ জুন) এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও বলেন, ‘এই হামলা ইসরায়েলের একক সিদ্ধান্ত। যুক্তরাষ্ট্র এতে অংশ নেয়নি, তবে এ বিষয়ে আমরা অবহিত ছিলাম।’
রুবিও বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত মার্কিন বাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’
ইসরায়েল আত্মরক্ষার্থে ইরানের পারমাণবিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে বলেও জানান তিনি।
ইরানকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ‘ইরান যেন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ বা নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু না করে—এটি আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান নিহত
অতীতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সরাসরি ইসরায়েলকে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হতো। তবে ইসরায়েল ইরানের পাল্টা হামলার মুখে পড়লে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কী হবে, তা স্পষ্ট করেননি রুবিও।
হতাহতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা উইটকফের
ইসরায়েলের হামলার জবাবে ইরানের প্রতিক্রিয়ায় বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।
দেশটির রিপাবলিকান সিনেট-সদস্যদের তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েল যদি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, তবে ইরানের পাল্টা হামলা বড় ধরনের প্রাণহানির কারণ হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসের প্রতিবেদনের বরাতে টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, গত সপ্তাহে একটি গোপন বৈঠকে উইটকফ জানিয়েছিলেন, ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে দেশটিতে সামরিক হামলার চালাতে পারে ইসরায়েল।
বৈঠকে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা নিয়েও কথা বলেন উইটকফ। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। কারণ এটি একসঙ্গে শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্রের হামলার ভার নিতে সক্ষম নয়।
এদিকে, ট্রাম্প বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘ইসরায়েলের হামলা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’
তবে তিনি ইসরায়েলকে এই হামলা না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি ভালো চুক্তির খুব কাছে পৌঁছে গেছি।’
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ইরান কয়েক শ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দিকে ছোড়ে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদেশগুলোর সহায়তায় সেগুলোর বেশিরভাগই প্রতিহত করতে সক্ষম হয় ইসরায়েল। তার আগে গত বছরের এপ্রিলেও ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই হামলার পর থেকে ইরান প্রতি মাসে প্রায় ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন বাড়িয়েছে। ইরানের লক্ষ্য হচ্ছে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অতিক্রম গুঁড়িয়ে দেওয়ার মতো ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা অর্জন করা।
পরমাণু ইস্যুতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আলোচনা চলমান থাকলেও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ইসরায়েল যে ইরানে বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, সে বিষয়টি উঠে আসে।
আলোচনার ব্যাপারে আশাবাদী থাকলেও শুক্রবারের হামলার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সমাধানের পথ এখনও খোলা, তবে সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।’
এমনকি আগামী রবিবার (১৫ জুন) তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম নিয়ে ষষ্ঠ দফায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ট্রাম্প প্রশাসন।
১ দিন আগে